মোঃ জসিম উদ্দিন, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃদিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় “সাদা সোনা” খ্যাত রসুনের ভালো ফলন হলেও দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। কৃষক-শ্রমিক, চাকরি জীবিসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ বর্গা নিয়ে কিংবা নিজের জমিতে চাষ করেছেন রসুন। অর্থকরী ফসল রসুন চাষে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরলেও বর্তমানে ভালো দাম না থাকায় এই রসুনই যেন এখন তাদের মরার উপর খারার ঘা।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চৈত্রের তাপদাহ উপেক্ষা করে ক্ষেত থেকে রসুন উত্তোলন করে পরিপাটি শেষে বস্তাবন্দি করে বিভিন্ন বাহনে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে আসছেন চাষীরা। বাজারে পাইকার ও রসুনের চাহিদা থাকলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন চাষীরা। তাই ভালো দাম না থাকায় তাদের চোখে মুখে দেখা যায় হতাশার ছাপ। এসময় মানভেদে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হতে দেখা যায় রসুন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে খানসামা উপজেলায় ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। তবে গত বছরের চেয়ে কম যা গত বছর হয়েছিলো ৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এ বছর কমেছে রসুনের আবাদ। তারপরও সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর উপজেলায় রসুনের ভাল ফলনের মাধ্যমে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলার ছাতিয়ান গড় গ্রাম এলাকার রসুন চাষি শাহজালাল বলেন, তিনি ২ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। রসুনের ফলন ভালো হয়েছে কিন্তু সার, বীজ, কিটনাশক ও পরিচর্যায় খরচ অনেক। গত দুই বছর ধরে রসুনের বাজার আর আগের মতো নেই। আগে আমরা রসুন পাইকারি বাজারে তিন থেকে চার হাজার টাকা মণ বিক্রি করতাম। যা এখন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৩০০ টাকা মণ বিক্রি করছি অথচ ১ মণ রসুন ফলাতে খরচ হয় প্রায় ২০০০ হাজাত টাকা। এভাবে চললে আমরা কৃষকরা বাঁচবো কীভাবে? ছফুর উদ্দিন নামে আরোও একজন জানান, তিনি এবার প্রায় ৩ বিঘা জমিতে তিনি রসুন চাষ করেছেন।
গত বছরের চেয়ে এবার উৎপাদন খরচ বেশি। এবছর প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৪৫-৬০ হাজার টাকা আর বিঘাপ্রতি ৪০-৫০ মণ রসুন হয়েছে। উৎপাদন ভালো হলেও খরচ অনুযায়ী বাজারে দাম নেই। এরকম দাম থাকলে সকল চাষীকেই লোকসান গুনতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। রসুনচাষি আব্দুল মান্নান বলেন, রসুনের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজার নেই। রসুনের বাজার না থাকায় আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো কৃষক। আমাদের কৃষিকাজ করেই সংসার চলে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা রসুন, আলু, ধান চাষ করি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।